লেখা: আরেফিন জিসান (ঈষৎ পরিমার্জিত)
অ-১৭ ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের স্ট্রাকচারে বড়সর পরিবর্তন এসেছে। প্রতিটি আসর দুই বছর ব্যবধানে না হয়ে এখন থেকে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হবে এবং ২০২৯ সাল পর্যন্ত পরবর্তী ৫টি আসরের হোস্টিং রাইটস পেয়েছে কাতার।
এই বছরের আসরটির জন্য এপ্রিলের অ-১৭ এশিয়া কাপ থেকে কোয়ালিফাই করবে কাতার ছাড়া আরও ৮টি এশিয়ান দেশ! কারণ অ১৭ বিশ্বকাপের দল সংখ্যা করা হয়েছে ৪৮টি!
এদের থেকে ১২টি করে দল বাছাই করে ৪টি মিনি বিশ্বকাপ হবে ৪ দলের ৩টি গ্রুপে। প্রতিটি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও ১টি বেস্ট রানার আপ দল নকআউটে খেলে চ্যাম্পিয়ন দল বেরিয়ে আসবে। এভাবে ৪টি চ্যাম্পিয়ন দল নিয়ে ফাইনাল রাউন্ড হবে।
বাছাইতে আফগান ম্যাচটা আমাদের পক্ষে জেতা সম্ভব ছিল, সেক্ষেত্রে হেড টু হেডে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতাম আমরা। ২-৩ স্কোরলাইনে হারা ম্যাচটা অন্তত ড্র করলেও কোয়ালিফাই করা ৫টি বেস্ট রানার আপ দলের ভেতর ৩য় হয়ে মূল রাউন্ডে থাকতাম আমরা। এবং দুই সিনারিওতেই আমাদের গ্রুপ্টটা হতো নিম্নরূপ:
🇰🇷দক্ষিণ কোরিয়া
🇾🇪ইয়েমেন
🇦🇫আফগানিস্তান (আমরা বেস্ট রানার আপ হলে)
অথবা,
🇮🇩ইন্দোনেশিয়া (আমরা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলে)
এই গ্রুপ থেকে রানার আপ হলেই বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতাম আমরা। আপনারা কি ধারণা করতে পারছেন যে, কত বড় একটা সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে আমাদের অ-১৭ দলটার? এই শতকে আমার দেখা সেরা অ-১৭ ব্যাচ ছিল তারা। দলগত খেলার এমন কোয়ালিটি সাধারণত দেখা যায় না আমাদের ফুটবলে। সঠিক বয়স, নিচ থেকে বিল্ডআপ, প্রতিপক্ষের মিডল ব্লক ভাংবার ক্রিয়েটিভ কোয়ালিটি সাথে লং বলের ব্যালেন্সড মিক্স আপ- সব মিলিয়ে কি দারুণ একটা ব্যাচ ছিল তারা। অথচ ক্যারেক্টার, অনেস্টির অভাবে বাদ পড়ে গেল তারা।
৭০ মিনিটের বেশি ১০ জন নিয়ে খেলা কম্বোডিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটা হারলাম। সেখানেই মূলত ড্যামেজ যা হবার হয়ে যায়। লেফট উইংয়ে আরহামকে ঠিকমত পাস না দিয়ে খেলা আর রাইট ফ্ল্যাংকে এত বেশি কম্পলিকেটেড করে ফেলে তারা যে কম্বোডিয়ানরা বামে ডিফেন্ডিংয়ে আর ভ্রুক্ষেপই করেনি। একদম প্রেডিক্টেবল হয়ে গিয়েছিল। আরহাম আবার ডানে এসেছিল সুইচ করে, খেলা তখন আবার বামে শিফট হয়ে যায় পুরোপুরি।
ফুটবলাররা ম্যানেজমেন্টের ভুল ডিসিশন এবং তাদের কথা শুনে নিজেরাই নিজেদের পায়ে কুড়াল মারলো। বয়সভিত্তিক লেভেলে এসব ব্যাপারে বাফুফের নতুন কমিটি শক্তভাবে পদক্ষেপ না নিলে দেশের ফুটবলের সঠিক উন্নতি হবে না। একাডেমির কোচ হয়েছেন ছোটন। সাথে আগের হেড কোচ আবুলসহ তার সহকারীদের সঠিক মূল্যায়ন ও ক্ষমতার ভারসাম্য জরুরি। তারা ঢাকার বাইরে গিয়েও স্কাউট করে খেলোয়াড় নিয়ে এসেছিল। ভালো প্রসেস যেন কেউ বাধাগ্রস্ত না করে।
অ-২০ ফিফা বিশ্বকাপে দল সংখ্যা আগের মতই আছে। অ-১৭ মহিলা ফিফা বিশ্বকাপে দল সংখ্যা ১৬ থেকে ২৪টি হয়েছে। এশিয়ার স্লট ৩ হতে ৪টি হয়েছে মাত্র। আর এশিয়ান মহিলা ফুটবলের বিগ ফাইভ এত বেশি এগিয়ে যে স্লট আরও ২-১টি না বাড়ালে আমাদের মেয়েদের পক্ষে কোয়ালিফাই করা সম্ভব না।
নভেম্বরে ছেলেদের আবারও অ-১৭ এশিয়া কাপ বাছাই আছে। বাফুফেকে এখন খুব গুরুত্ব নিয়ে এগোতে হবে এখানে।
Tags
analysis