স্রেফ যোগাযোগের অভাবেই হাতছাড়া হয়েছিল আকাশ ছোঁয়ার সুযোগ!


স্রেফ যোগাযোগের অভাবেই হাতছাড়া হয়েছিল আকাশ ছোঁয়ার সুযোগ!

বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ফুটবলার কে এমন প্রশ্নে সবার মনে হয়তো একটা নাম চলে আসে সবার আগে; তিনি হলেন মোনেম মুন্না। যার ব্যাপারে জার্মান কোচ অটো ফিস্টার বলেছিলেন "ছেলেটা ভুল করে বাংলাদেশে জন্মেছে।" 

কিন্তু বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা গোল কিপার কে? এমন প্রশ্ন করলে হয়তো অনেকে চুপ হয়ে যাবেন, কারণ তাকে নিয়ে যে খুব বেশী আলোচনা হয়না। অটোফিস্টার মোনেম মুন্নার খেলা দেখে যেই উক্তিটা করেছিলেন, যদি  বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা গোলরক্ষক আমিনুল হককে দেখতেন তবে হয়তো এর চেয়েও দুর্দান্ত কোনো উক্তি করে যেতেন। 

অটো ফিস্টার না দেখলেও দেখেছিলেন আরেকজন কোচ। আবাহনীকে আনডিফিটেড চ্যাম্পিয়ন করা লিজেন্ডারি কোচ জর্জ কোটান। তার জীবদ্দশায় দেখা অন্যতম সেরা গোল কিপার হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন আমিনুলকে। এমনকি সাউথ এশিয়ার অন্যতম দুই লিজেন্ডারি ফুটবলার আলি আশফাক এবং বাইচুং ভাটিয়ার সাথে তার জেনারেশনের অন্যতম একজন সেরা ইনফুয়েন্সিয়াল প্লেয়ার হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন আমিনুলকে। আমিনুলের পজিশনিং সেন্স এবং গেম রিড করার দক্ষতার জন্য তাকে সাউথ এশিয়ান ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 

২০০৪ সালে ডাক পেয়েছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে দামী লিগ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব Newcastle United এর হয়ে ট্রায়াল দেওয়ার জন্য। কিন্তু শুধুমাত্র যোগাযোগের অভাবে সে সুযোগটা ভেস্তে গিয়েছিলো।

এর আগে ২০০৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ার ওয়ার্ল্ডকাপ খ্যাত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন করার পিছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেন। 
১৯৯৫ সালের এস এ গেমসের স্বর্ণজয়ী স্কোয়াডে ছিলেন আমিনুল।

বাংলাদেশর তৎকালীন দুই কোচ কোটান, ডিডো তাকে ইউরোপে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। যেতে পারলেন না। ভাগ্যে নেই। কোটান বুন্দেসলিগার দ্বিতীয় স্তরের একটা দলে খেলানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পাননি দেশে । ডিডো ডেনমার্কের একটি প্রথম সারির ক্লাবে খেলানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। দুর্ভাগ্য, ইনজুরিতে পড়ায় সুযোগটা নিতে পারেননি।

২০০০ সালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সৌদি আরবে খেলতে গিয়ে সৌদি আরবের একটি ক্লাব তাকে পছন্দ করেছিল। খেলার প্রস্তাবও পান, কিন্তু ওই বছরই সৌদি ফুটবলে বিদেশি গোলরক্ষক নিষিদ্ধ হয়ে যায়। 

ভাবা যায়! একজন বেলেমির কল্যাণে ওয়েলস পেয়েছে গ্যারেথ বেল,এরন রামসিদের। একজন ডেভর সুকার জাগিয়েছেন লুকা মড্রিচ, ইভান রাকিটিচ কিংবা ইভান পেরিসিচের মত নামী খেলোয়াড়দের। কে জানে হয়তো আমিনুলও পারতেন বাংলাদেশের ফুটবলকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে। হতে পারতেন ফুটবল বিশ্বের নতুন কোন ক্যাসিয়াস কিংবা বুফন। কিন্তু আমিনুলের গল্পটা কেবল আক্ষেপের!
Previous Post Next Post

Advert1

Advert2

نموذج الاتصال